এক গ্রামে এক ধনী গেরস্ত বসবাস করিতো। তাহার অনেক টাকা পয়সা ছিল। তাই প্রতিরাতে রাতেই দুই চোর চুরি করিবার আশায় তাহার বাড়ির আশে পাশে ঘোড়াফেরা করিত । কিন্তু চুরি করিতে পারিতো না। কারন গেরস্থ প্রতিরাতেরই সজাগ থাকিয়া তাহার টাকা পয়সা পাহারা দিত। কিন্তু এইভাবে আর কত রাত জাগিয়া জাগিয়া পাহারা দেওয়া যায়। তাই একরাতে গেরস্থ ও তার গিন্নি একটা ফন্দি আঁটিল। তাহারা রাতে জাগিয়া রহিল। হঠাৎ তারা একসময় জানালার পাশে চোরের আওয়াজ শুনিতে পাইল। তারা হুঁহুঁহিহি কর কি যেন কথা কহিতেছে। গেরস্থ চোর আসিয়াছে বুঝিতে পারিয়া উচ্চস্বরে গিণ্ণিকে বলিল- জানো গিণ্ণি, আমি আর এই ধন আগলাইয়া রাখিয়া রাত জাগিতে পারিব না। রাতে ভাল ঘুম না হওয়াতে দিনে ক্ষেতে ভালো করিয়া কাজ করিতে পারিনা। অল্পতেই পেরেসান হইয়া পরি। তারচেয়ে চলো আমরা আমাদের সমস্ত ধন ঐ কুয়োর মধ্যে লুকিয়া রাখিয়া আসি। তাহলে রাতের বেলা চোরে চুরি করিলেও আমারদের কোন ক্ষতি হইবে না। চোর টাকা পয়সা না পাইয়া নিরাশ হইয়া চলিয়া যাবে। আর চোর ব্যাটারা কোনদিন ভাবতেও পারবেনা যে সমস্ত টাকা পয়সা ঐ কুয়োর মধ্যে আছে। গিণ্ণি বলিল- তাই করো, চলো আমরা সমস্ত টাকা পয়সা ঐ কুয়োর মধ্যে ফেলিয়া আসি।
এইদিকে দুই চোর তো খুশিতে আত্মহারা হইয়া হাসিতে হাসিতে মাটিতে লুটিয়া পড়িল এবং একে অপরকে বলিল- আজ গেরস্থ জানিতেও পারিবেনা আমরা তাহার সমস্ত ধন লুট করিয়া লইব। চোরের এই কথা শুনিয়া গেরস্থ মৃদু হাসিল। তারপর গেরস্থ ও গিন্নি মিলিয়া একটি বাক্স কুয়োর মধ্যে স্বশব্দে ফেলিয়া দিয়া ঝোপের আড়াল হইতে লুকিয়া লুকিয়া দেখিতে লাগিল চোর ব্যাটারা কি করে। চোরেরা কালক্ষেপন না করিয়া সঙ্গে সঙ্গে কুয়োর কাছে গিয়া দেখিল, কুয়োতে অনেক জল। তাই দুই চোর যুক্তি করিল কুয়োর সমস্ত জল সেচিয়া ফেলিয়া দিবে। যা ভাবা তাই কাজ। দুই চোর দুটি বালতি লইয়া কুয়োর জল সেঁচা শুরু করিল।
এদিকে গেরস্থের কুয়োর পাশেই একটি ধানের ক্ষেত ছিল। গেরস্থ লুকিয়া গিয়া ক্ষেতের আশে পাশে কোদাল দিয়ো অনেক নালা তৈরী করিল যাতে কুয়োর সমস্ত জন ঐ নালা দিয়া আসিয়া জমি ভরিয়া যায়।
এইভাবে দুই চোর কুয়োর জল তুলিতে তুলিতে অনেকটা সময় পার করিয়া দিল। ভোর হতে আর বেশি দেরিও নেই। গেরস্থ নালা কাটিয়া দিয়া আসিয়া গিণ্ণিকে কহিল- শোন গিণ্নি, তুমি রাজবাড়িতে গিয়া সেপাহিদের খবর দাও যে আমাদের বাড়িতে চোর পড়িয়াছে আর আমি এদিকে চোরদের উপর নজর রাখি।
কুয়োর জল তুলিতে তুলিতে যখন কুয়োর সমস্ত জল শুকিয়া গেল। তখন চোর দুটি দেখিতে পাইল একটি বাক্স। তারা দুজনে বাক্স তুলিতে গিয়া দেখিল অনেক ভারি। তারা একে অপরের দিকে তাকাইয়া কহিল- মনে হয় অনেক সোনা দানা আছে নয়তো এতো ভারি হইবে কেন! আমরা একদিনে অনেক বড়লোক হইয়া যাইব। অধিক কষ্টে দুই চোর বাক্সটি কুয়ো থেকে তুলিয়া আনিল। এরপর বাক্সটি খুলিয়া দেখিল তাহার মধ্যে শুধু পাথর আর পাথর। সোনা-দানার লেশমাত্র নাই। এই সময় গেরস্থ ঝোপের আড়াল হইতে বাহির হইয়া আসিল। চোর তাহাকে দেখিয়া পালাইতে যাইবে অমনি পেছন হইতে রাজার সেপাহিরা চোর দুটোকে ধরিয়া ফেলিল। চোর দুটি চলিয়া যাইবার সময় গেরস্থকে হাজারও গালমন্দ করিতে লাগিল।
এদিকে গেরস্থ গিণ্নিকে বলিল- জানো গিণ্ণি, চোরের অত্যাচারে জমির যে কাজ দিনের বেলায় করিতে পারি নাই সেই কাজ আজ চোরকে দিয়াই করিয়া লইয়াছি।
এক গ্রামে এক ধনী গেরস্ত বসবাস করিতো। তাহার অনেক টাকা পয়সা ছিল। তাই প্রতিরাতে রাতেই দুই চোর চুরি করিবার আশায় তাহার বাড়ির আশে পাশে ঘোড়াফেরা ক...
About author: Sisir Suvro
Cress arugula peanut tigernut wattle seed kombu parsnip. Lotus root mung bean arugula tigernut horseradish endive yarrow gourd. Radicchio cress avocado garlic quandong collard greens.
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 coment�rios: